জগন্নাথপুর টুডে ডেস্ক::
দেশে কোনো কাজ না করলেও বিদেশে কাজ করতে যেতে ৪ লাখ টাকা শ্বশুরবাড়ি থেকে দাবি করে আসছিল যুবক জুলহাস। দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুরালয় থেকে দাবিকৃত টাকা না পেয়ে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিল সে। একপর্যায়ে টাকা পেতে নিজের ছেলেকে অপহরণের নাটকও সাজায়। তারপরও টাকা না পাওয়ার ক্ষোভে এবং পারিবারিক কলহের জেরে নিজ সন্তানকে হত্যা করে বাবা জুলহাস। এ ঘটনায় র্যাব জুলহাস ও সহযোগী জুয়েলকে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিবেশী জুয়েল ব্যাপারীসহ দুই জনে মিলে সাড়ে তিন বছরের ছেলেকে হত্যা করে। পরে জুলহাস র্যাবের কাছে গিয়ে অভিযোগ করে, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। তদন্তে নেমে র্যাব জানতে পারে, অপহরণ নয়, শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা না পেয়ে জুলহাস নিজেই জুয়েলকে নিয়ে নিজ সন্তানকে হত্যা করেছে। অবশেষে পাষণ্ড সেই বাবাসহ দুই ঘাতককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায়।
র্যাব-১০-এর কোম্পানি কমান্ডার উপ-পরিচালক আলী রেজা রাব্বী জানান, গত ২৯ জুন জুলহাস আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করে, তার ছেলে মাহিমকে গত ২৭ জুন কে বা কারা অপহরণ করেছে। এ ঘটনায় সে যাত্রাবাড়ী থানায় জিডিও করেছে। অভিযোগ পেয়ে ৩০ জুন মাতুয়াইল মৃধাবাড়ি এলাকা থেকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত জুয়েল ব্যাপারীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল অপহরণের কথা স্বীকার করে এবং এ অপহরণের সঙ্গে ভিকটিমের বাবা জুলহাসের সংশ্লিষ্টতার কথা জানায়। পরে জুলহাসকেও গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তা পান করিয়ে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। গত ২৬ জুন জুয়েল আটটা ঘুমের ওষুধ ক্রয় করে জুলহাসকে দেয়। পরের দিন জুয়েল শিশু মাহিমকে তার বাসার সামনে থেকে ফুসলিয়ে তার বাবা জুলহাসের পূর্বনির্ধারিত স্থান মাতুয়াইল বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায়। এরপর জুলহাস এবং জুয়েল ভিকটিমকে মাতুয়াইল বাসস্ট্যান্ড থেকে ডেমরার দেইল্লা নামক নির্জন এলাকায় নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে জুসের সঙ্গে আটটা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করায়।
এরপর তারা ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ঐদিন সন্ধ্যায় মৃধাবাড়ী ময়লার ডিপোসংলগ্ন গ্রীন মডেল টাউন এলাকায় কাশবনের ভেতর বালু চাপা দিয়ে নিজবাড়িতে চলে যায়। এরপর জুলহাস তার ছেলে অপহরণ হয়েছে বলে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি জিডি করে। অপহরণ প্রমাণ করার জন্য ২৯ জুন জুয়েলকে দিয়ে মুক্তিপণ চেয়ে নিজের মোবাইলে একটি ম্যাসেজ পাঠায়। গ্রেফতারের পর শিশু মাহিমের মরদেহ উদ্ধার করে র্যাব।