স্টাফ রিপোর্ট:-
জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের খাগাউড়া মহিষাকোনা গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে অষ্টাদশী তরুনী মারিয়া বেগমের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) মারিয়ার লাশ সুনামগঞ্জ হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে খাগাউড়া গ্রামে নিয়ে আসা হলে পরিবার, আত্ময়ি স্বজন, সহপাঠিদের বুকফাটা করুন আহাজারীতে খাগাউড়া গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
বাবা, মা, ভাই-বোনরা বার বার জ্ঞান হারিয়ে পেলেন। ঐদিন মাগরিবের নামাজের পর তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে মারিয়া বেগমের আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু হলেও আসল রহস্য উদঘাটনে পুলিশ গোপনে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে থানা সূত্রে জানাগেছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় পরিবারের সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাথরুমের ফ্যান লাইটের স্টীলের ভেন্টিলেটারের সাথে গলায় উড়না পেছিয়ে মারিয়া বেগম আত্মহত্যা করে।
মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মারিয়া বেগমের আত্মহত্যার পেছনে অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকলেও প্রভাবশালী একটি মহলের ভয়ে অনেকেই মূখ খুলছেন না। তবে মারিয়া বেগমের আত্মহত্যার পেছনে কিছু কারন রয়েছে এমন রহস্যের তথ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক যুবকরাই জানিয়েছেন। ভাটির জনপদ অজো পাড়া গাঁয়ের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মারিয়া বেগম ছোট বেলা থেকেই স্মার্ট ও সুস্্ির হওয়ায় ৮ম শ্রেনী পাশ করার পর থেকেই নজরে পড়ে খাগাউড়া গ্রামের ধনাঢ্য পরিবারের যুবক এনামুল হক এনামের নজরে।
বিভিন্ন কৌশলে মারিয়া বেগমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন এনাম। দীর্ঘদিন একজন আরেক জনকে গভীর থেকে গভীরে ভালোবাসার শেষ ঠিকানায় পৌছেন। পঞ্চগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরিচিত মারিয়া বেগম গত বছরে এস এস সি পরীক্ষা দেয়।
সূত্র জানায় প্রেমিক এনামুল হক এনাম নিরীহ পরিবারের মেয়ে মারিয়াকে জীবন সঙ্গী করতে নানা কৌশলে তার সাথে প্রেমের অভিনয়ে কেঁড়ে নেয় মারিয়ার জীবনের আশা আকাঙখার প্রদীপ। এক সময় মারিয়া এনামকে কাছে পেতে উম্মাদ হয়ে উঠে। থেকে যায় মারিয়ার জীবনে গতি। বন্ধ হয়ে যায় পড়া লেখা। কিছুদিন ধরে প্রেমিক এনামুল হক এনাম মারিয়াকে ভুলে যেতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
ফলে মারিয়া এনামকে কাছে পেতে উম্মাদ হয়ে পড়ে। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে প্রেমিকের পথ পানে চেয়ে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা দিনের পর দিন। সূত্র আরো জানায়, মারিয়া বেগম তার প্রেমিক এনামকে বিভিন্ন মাধ্যমে খোজ করলেও তার সাথে কথা বলা কিংবা কথা বলার সুযোগ পায়নি। দিন যত গড়িয়ে যাচ্ছে ততই মারিয়ার জীবনে দেখা দেয় ব্যর্থ প্রেমের আভাস। এর পরও থেমে থাকেনি মারিয়া।
সম্প্রতি ধনাঢ্য পরিবারের প্রেমিক এনামুল হক এনাম অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নেয়। দ্রুত এ খবরটি পৌছে যায় মারিয়া বেগমের কাছে। কিন্তু প্রতারক প্রেমিক মারিয়াকে ভুলে গিয়ে শেষ মেশ অন্যত্র বিয়ের দিনক্ষন ঠিক করে নেয়। এমন সংবাদ পেয়ে মারিয়া বেগম অভিমান আর ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে। অবশেষে প্রেমিকের চলনাময়ী ভালোবাসায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভিমান করে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।
জগন্নাথপুর টুডে/১৮