জগন্নাথপুর টুডে ডেস্ক:
বহুল আলোচিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ২৭ মাস গত হয়েছে বুধবার। তনুর পরিবারে এ বছরও ছিল না ঈদের আনন্দ। এতদিনেও তনুর ঘাতকরা রয়ে গেছে অধরা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে অনড় তনুর পরিবার, তার সহপাঠী ও গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার নেতৃবৃন্দ।
তনুর দুটি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ‘মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ’ উল্লেখ না থাকা এবং সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করতে না পারায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভের অন্ত নেই। তবে ঘাতক শনাক্তকরণে কয়েকজন ব্যক্তির ডিএনএ প্রতিবেদনই এখন ভরসা বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ প্রতিবেদন সহসাই মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির হাতে পৌঁছবে, তখন এ মামলার তদন্তের একটা কিনারা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, তনু হত্যার রহস্য বের করতে ২৭ মাস অতিবাহিত হওয়ার কথা নয়। তিনি অবিলম্বে তনুর খুনিদের শনাক্তের দাবি জানান। নারী নেত্রী রাশেদা আখতার বলেন, তনুর ঘাতকদের বিচার হবে না, এটা তো মেনে নেয়া যায় না।
বৃহস্পতিবার(২১জুন) সাংবাদিকদের নিকট ক্ষোভ প্রকাশ করে তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, দীর্ঘ ২৭ মাসেও মেয়ের ঘাতকদের শনাক্ত কিংবা গ্রেফতার করতে পারেনি সিআইডি। মেয়ের হত্যাকারীরা শনাক্ত হবে কি না এ নিয়ে আমরা সন্দিহান।
তিনি আরো বলেন, তনু হত্যার পর অনেকেই বাসায় এসে ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন আর কেউ আমাদের খোঁজ-খবরও নেয় না। সিআইডির জালাল সাহেবও (মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা) খবর নেন না, মামলার কি খবর তাও তিনি জানাচ্ছেন না।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালালউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলাটি অধিক গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে, এখানে কোনো গাফিলতি নেই। তদন্তে এমন কিছু বিষয় উঠে এসেছে যেখানে ইচ্ছে করলেই তাড়াহুড়ো করে কিছু করা যাবে না। মামলার তদন্তের স্বার্থে অনেককে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দুটি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ না থাকায় ভিন্ন কৌশল নিতে হচ্ছে। সন্দেহভাজন কয়েকজনের ডিএনএ প্রতিবেদন হয়তো সহসাই হাতে পেতে পারি, তখন মামলার তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে আরো নতুন কিছু জানানো যাবে বলে আশা করি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি বাসায় টিউশনি করতে যায় তনু। নির্ধারিত সময়ে সে বাসায় না ফেরায় তার স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতরের কালা পাহাড় নামের একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহের সন্ধান পায়।
সুত্র- ইত্তেফাক/বিডিএন