মুহাম্মদ শাহেদ রাহমান (যুক্তরাজ্য ) :
লন্ডন টু সিলেটের যাত্রীদের নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বিমানে! বাংলাদেশ বিমানের লন্ডন সিলেট ফ্লাইট বন্ধ করায় ব্রিটেনে ক্ষুব্ধ বাঙালি কমিউনিটি নানা পেশার মানুষজন তাই বলছেন। এমনকি এভাবে যাত্রী হয়রানী চলতে থাকলে বিমানে চলাচল বয়কট করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রবাসী কেউ কেউ; চলছে প্রতিবাদ।
শুক্রবার ( ২৪ জুলাই ) বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স (সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ) একটি নোটিশে জানিয়েছে, এখন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সে যারা লন্ডন থেকে সিলেট যাবেন তারা ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বডিং পাস নিয়ে সিলেটে যাবেন !
ইংল্যান্ডের ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল এবং হিলসাইড ট্রাভেলসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হেলাল খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে ধীরে ধীরে ক্ষোভের জন্ম হচ্ছে ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটিতে। কমিউনিটির সাধারণ মানুষ একে প্রবাসীদের প্রতি বিমানের যুলুম-নিপীড়ন মূলক মানষিকতা বহিপ্রকাশ বলে মনে করছেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন যুক্তরাজ্যে ‘আমরা সিলেটবাসী’ সংগঠনের নেতৃবন্দ।
ইউকে-তে হাইকমিশনের দ্বারস্থ ‘আমরা সিলেটবাসী’ সংগঠনের সভাপতি সাংবাদিক আনসার আহমেদ উল্লাহ ও সেক্রেটারি ডক্টর আনিছুর রহমান বলেন— আমরা বিমানের সরাসরি লন্ডন টু সিলেট ফ্লাইট চাই। কর্তৃপক্ষের ভিন্ন সিদ্ধান্তের পরিবর্তন চেয়েছি জনস্বার্থে । দাবি জানিয়েছেন প্রয়োজনে সিলেটে আইসোলেশন সেন্টার করার, তবুও তাদের ইমিগ্রেশন যেন সিলেটে হয় এবং লাগেজ যেন সিলেটই যায়।
যেন বাংলাদেশ বিমানে লন্ডন সিলেট যাত্রীদের চূড়ান্ত গন্তব্য এবং লাগেজ সংগ্রহ সিলেটেই হয় ।
ঢাকায় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর তাদের ডমেস্টিক ফ্লাইটে সিলেটে পাঠানো হচ্ছে, সেই সিদ্ধান্ত সরকারকে বাতিল করতে হবে ।
এদিকে করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্যই উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় বিমান এমন নির্দেশনা জারি করেছে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার।
করোনা ঠেকাতে ঢাকার নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তরফে জানানো হয় তারা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।
সরকারি ওই সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।
বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল হেলাল খান গতকাল ফেসবুক পোস্টে লিখেন- ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স (সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ) একটি নোটিশ দিয়ে আমাদের জানিয়েছে যে, এখন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সে যারা লন্ডন থেকে সিলেট যাবেন তারা ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বোর্ডিং পাস নিয়ে সিলেটে যাবেন! কেউ কি ভাবতে পারেন কতটুকু জুলুম-নিপীড়নমূলক মানসিকতা থেকে বিমানের ঐ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এ কাজটি করছেন? নিঃসন্দেহে এটি একটি চরম সিলেট বিদ্বেষী আচরণ! একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নয়, সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি- আমাদের পূর্ব পুরুষদের রক্ত ঘামে গড়া দেশের মানুষের সঙ্গে এই অমানবিকতার শেষ হোক! আসুন এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই একসঙ্গে।
সাংবাদিক মিসবাহ জামাল লিখেন-
আমি যতদিন লন্ডন সিলেট সরাসরি বিমান না চলবে, আমি বয়কট করলাম।এখন দেখার পালা। খুবই মানসিক আঘাতের কারণে আমি আজ থেকে বিমান বয়কট করলাম।
এ রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন , ব্যক্তি করোনাকালিন সময়ে ব্রিটিশ আইন পালন করে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে লন্ডনে বাংলাদেশে হাইকমিশনের মাধ্যমে কর্তপক্ষের বরাবরে সমাধানের লক্ষ্যে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন – আনসার আহমদ উল্লাহ, নূরউদ্দিন আহমদ , মতিয়ার চৌধুরী, ড. আনিছ , শাহ মোস্তাফিজুর রহমান বেলাল ও জামাল খান প্রমুখ।
স্মারক লিপিতে লন্ডনে ও ঢাকায় বিমানের বিভিন্ন দুর্নীতির কথা লিখেন এবং কেন সিলেটবাসীর সাথে বারবার এমন হচ্ছে, কি স্বার্থ , কাদের স্বার্থ তা স্পষ্ট উল্লেখ করেন নের্তৃবৃন্দ।