জগন্নাথপুর পৌর শহরের ইকড়ছই মাদরাসার দক্ষিণ পাশে ধানী জমির কর্নারে হাল্কা ঝোপের পাশে আগুনে পোড়া অজ্ঞাত নারীর পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। নিহত ওই নারী দিরাই উপজেলার মাতারগাঁও গ্রামের চন্দন মিয়ার স্ত্রী পিয়ারা বেগম ওরফে রিনা বেগম (৫৩)।
আজ শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) ওই নারীর মেয়ে সুভা বেগম বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় জগন্নাথপুর পৌর শহরের ইকড়ছই জামিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন বোরো জমির ফাঁকা স্হানে হাল্কা ঝোপের পাশে অজ্ঞাত এক নারীর শরীরের বিভিন্ন স্হানে আংশিক আগুনে পোড়া মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। দ্রুত থানায় জানানো হলে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আবু সাঈদ, সহকারী পুলিশ সুপার শুভাশীষ ধর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ কর্তৃক লাশের সুরতহাল শেষে থানায় নিয়ে আসা হয়।শত শত উৎসুক মানুষের ভীড় হলেও লাশটি কেউ সনাক্ত করতে পারেন নি।বিকেলে সিআইডি ও পিবিআই এর বিশেষজ্ঞ ঠিম অজ্ঞাত ওই নারীর আঙ্গুলের চাপ সংগ্রহ করে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তাঁর ছবি ও নাম ঠিকানা পান।
এরপর থেকে ওই নারীর স্বজনদের সন্ধানে অভিযানে নামে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে দিরাই উপজেলার টংগর গ্রামে ওই নারীর মেয়ে সুভা বেগমের সন্ধান পাওয়া যায়।
মামলার বাদী সুভা বেগম বেগম বলেন, ৩০ বছর আগে আমার বাবার সাথে আমার মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি চন্দন মিয়াকে বিয়ে করেন। ৫ বছর আগে আবারো চন্দন মিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর তিনি আমার স্বামীর বাড়ি থাকতেন।
শোভা বেগম আরও বলেন, এক মাস আগে তিনি আমার খালার বাড়ি দিরাই উপজেলার রায়বাঙ্গালী গ্রামে বেড়াতে যান। সেখান থেকে মঙ্গলাবার (১৬ জানুয়ারি) ছাতক উপজেলার শ্রীমতিপুর যাওয়ার পথে তিনি নিখোঁজ হন।
পরে পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে মর্গে গিয়ে মায়ের আগুনে পোড়া মরদেহ দেখতে পাই। আমার মাকে খুন করা হয়েছে। কে বা কারা করেছে তা জানি না।
জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই নারীর দুটি বিয়ে হয়। দ্বিতীয় স্বামী চন্দন মিয়ার সঙ্গেও অনেকদিন ধরে সম্পর্ক নেই। ময়নাতদন্ত শেষে ওই নারীর পরিচয় পাওয়ার পর তাঁর মেয়ের পরিবারের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত রিনা বেগমের মেয়ে শোভা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) সুভাশীষ ধর বলেন, আগুনে পোড়া ওই নারীর মরদেহ পাওয়ার পর থেকে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। প্রথমে আঙ্গুলের চাপ মাধ্যমে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা অনুযায়ী ছাতক উপজেলা খোঁজ নিয়ে তাঁর স্বজনদের পাওয়া যায়নি।
পরে দিরাই উপজেলায় তাঁর স্বজনদের খোঁজ পাওয়া যায়। পরিচয় সনাক্তের পর এখন আমরা এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে কাজ করছি। আশা করছি দ্রুতই রহস্য উদঘাটনসহ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
জটুডে/এহাই