ডেস্ক নিউজ:-
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর স্থান নির্ধারণ নিয়ে সুনামগঞ্জবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমপি এম এ মান্নান ।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টি হাওরবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার উল্লেখ করে বলেছেন, কোনো অপপ্রচারে কান দেবেন না। এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি। প্রয়োজনে সবার মতামতের ভিত্তিতেই হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আরও বলেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি বিশ্বমানের একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে দেখতে চাই। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
আমি বেঁচে থাকলে সুনামগঞ্জের অজোপাড়া গাঁ সহ কোনো এলাকাই অবহেলিত থাকবে না। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ-ধর্শপাশা-নেত্রকোণা যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ৮ কিলোমিটার উড়াল সড়কের প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হবে আশা করছি।
সুনামগঞ্জের ডলুরায় ইমিগ্রেশন সুবিধাসহ স্থলবন্দরের কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজ এগিয়ে নেব আমরা সকলে মিলে। সুরমা নদীর ধারারগাঁও-হালুয়ারঘাট অংশে সেতু হবে। এই উন্নয়ন কাজগুলো হলে সুনামগঞ্জ হবে ট্রানজিট শহর।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব দিকে একটি বাইপাস সড়ক হবে এমনটা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই সড়ক হলে শহর দক্ষিণ দিকে যেভাবে বাড়ছে পূর্বদিকেও বাড়বে। শহরকে বড় করতে কিছু দূরবর্তী এবং পুরো জেলাবাসীর সুবিধাজনক স্থানেই বড় বড় স্থাপনা করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করবে। তাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেও স্থান নির্ধারণ করতে হবে।
সুনামগঞ্জ শহরে আমি বড় হয়েছি, সুনামগঞ্জকে বাদ দিয়ে বা সুনামগঞ্জ শহর থেকে কিছুই সরানোর কোন ইচ্ছা বা পরিকল্পনা আমার নেই। আমি সুনামগঞ্জ শহরটিকে বড় করতে চাই । আপাতত শহর দক্ষিণ দিকে বাড়লেই নাগরিক সুবিধা হয়। এজন্য নতুন নতুন স্থাপনার জমি ওই দিকেই নির্বাচন করা হচ্ছে।
মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবেহেলিত এলাকার উন্নয়ন চান। তাঁর সরকার ক্ষমতায় থাকলে এবং আমি সময় পেলে দোয়ারাবাজারে সুরমা নদীর ওপর এলাকাবাসীর দাবি মুক্তিযোদ্ধা সেতুরও বাস্তবায়ন হবে।
ছাতক-সুনামগঞ্জ রেল লাইন সম্প্রসারণের প্রাথমিক কাজ এগিয়েছে। রেল লাইনও মোহনগঞ্জ পর্যন্ত যাবে। দিরাই-শাল্লা সড়কে প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। শাল্লা-জলসুখা ও আজমিরিগঞ্জ সড়কে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-ঢাকার দুরত্ব কমানোর জন্য পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি মহা সড়কটিতে দুই লেন করা হবে এবং জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জে কুশিয়ারার নদীর ওপর সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
সুনামগঞ্জে সীমান্ত সড়ক বাস্তবায়নের জন্য এবং টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেকের টিলা, বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী শুল্ক স্টেশনে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। যাদুকাটা নদীতে সেতু নির্মাণ হচ্ছে এই সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য। এ সব উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে পুরো জেলাবাসীর জীবনমানের উন্নয়নের জন্য।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, সুনামগঞ্জের কোনো এলাকার কেউ আমাকে যেন ভুল না বুঝেন। দায়িত্বশীলরা কোন প্রকল্প নিয়ে আসলে ফিরিয়ে দিচ্ছি না আমি। সাধ্যমত সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।
শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জকে আলাদাভাবে দেখেন না জানিয়ে তিনি বলেন, আমি চাই শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ একসঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে এবং এটি হবে ভাটির সবচেয়ে বড় শহর।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হচ্ছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় এবং ১০ উপজেলার মধ্যবর্তী সুবিধাজনক স্থানে। টেক্সটাইল ডিপ্লোমা ইন্সটিটিউট সিলেটে হবার কথা ছিল। আমাদের চেষ্টায় সুনামগঞ্জে হচ্ছে। এটির স্থান নির্ধারণ হয়েছে চার জেলা এবং সুনামগঞ্জবাসীর সুবিধাজনক স্থান শান্তিগঞ্জে।
তিনি আরও বলেন, আমার নিজের পৈত্রিক বাড়িটি মানুষের উন্নয়নের জন্য নেওয়া প্রকল্পে সরকারকে দান করে দিয়েছি। আমার শান্তিগঞ্জের টিনশেডের বাড়িতে একটি কমিউনিটি সেন্টার করার ঘোষণা দিয়েছি। এলাকার দরিদ্র মানুষেরা এটিতে বিয়ে শাদিসহ সামাজিক অনুষ্ঠান করবেন। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সকলকে এই বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি সকলের সহযোগিতায় আমাদের প্রিয় সুনামগঞ্জ জেলাকে এগিয়ে নিতে চাই। দেশের উন্নয়নেও সকলের সহযোগিতা চাই।
জটুডে/এহাই