মো. আব্দুল হাই ,(জগন্নাথপুর সুনামগঞ্জ):
হাওর বেষ্টিত জগন্নাথপুর উপজেলার বৃহত্তর নলুয়া, মইয়া, ফিংলার হাওর সহ ছোট বড় প্রায় ১৫-২০টি হাওরে বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষক। কনকণে ঠান্ডা উপেক্ষা করে কৃষকরা চারা সংগ্রহ হালচাষ মই, সেচ ও রোপন কাজে দিনভর মাঠে রয়েছেন।
কৃষকরা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশী ধানের চেয়ে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল ধানকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। গত বোরো ও আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবং ধান ঘোলায় তুলতে পেরে চলতি বছর বেশ ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন ও নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ২০ হাজার ১শ’৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নলিয়া, মইয়া সহ বিভিন্ন হাওরে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর বোরো ধানের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে।
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়ান গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান জানান, বৃহত্তর নলুয়ার হাওরে কৃষকরা এখনো চারা রোপণে ব্যস্ত রয়েছেন। পানি সংকট থাকায় জমি চাষাবাদের ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকরা বিদেশী ধান আবাদ করছেন বেশী, প্রকৃতির অনুকুলে থাকলে বিগত বছরের মতো চলতি বছরের হাওরের ফসল ভালো হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন হাওরে পানি ও সেচ সমস্যার কথা জানিয়ে তারা বলেন, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। অন্যান্য সময়ের মতো এবারও এখানকার পানি সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসলে এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবী করেন কৃষকেরা।
উপজেলা বিভিন্ন হাওরে পানি ও সেচ সমস্যার কথা উল্লেখ করে কৃষকরা জানান কৃষি বান্ধব সরকার কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অন্য বছরের মত হাওর গুলোর পানি সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হলে বোরো আবাদের লক্ষ মাত্রা ছারিয়ে যাবে বলে কৃষকরা জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শওকত ওসমান মজুমদার জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষকরা গত বছর বোরো ফসলের ফলন ও দাম মুল্য পেয়েছেন। চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকরা অনেকটা আগে থেকেই বোরো চাষাবাদে মাঠে নেমেছেন। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে ধানের চারা লাগানো শেষ হয়েছে।
এ বছর বোরো আবাদে নতুন জাত সম্প্রসারনের জন্য ৩৫০জন কৃষককে প্রণোদনা সুবিধার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও বিভাগীয় প্রদর্শনীর আওতায় ২০জন কৃষককে বিনামূল্যে বীজ সার ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
কৃষি পরামর্শ সেবা সার্বক্ষনিক রয়েছে। ধান কর্তনের শেষ মুহুর্ত পর্ষন্ত কৃষকদের সাথে থেকে পরামর্শ সেবা চলমান থাকবে। এদিকে কৃষকরা যাতে নিরাপদে ধান কেটে ঘোলায় তুলতে পারে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ উপজেলা প্রশাসনের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ,
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও সবকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, সদস্যা ও সকল পর্যায়ের জন প্রতিনিধি ও গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। প্রকৃতি অনূকুলে থাকলে চলতি বছর বোরো ফসলের লক্ষ্য মাত্রা চারিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।